Monday, October 27, 2014

অন্যরকম কদিন ...

সেই অনেক অনেক দিন আগেও আমার একবার কাশ্মীর যাবার কথা হযেছিল।  তখনি সেখানে গোলাগুলি চলতে লাগলো আর আমার বাবা প্রথমেই আমার যাওয়া বন্ধ করে দিলেন।  আর এবার যখন আমি প্রায় রোজই google এ দেখে চলেছি কি দেখার, কি খাবার , কি করার আছে শ্রীনগর এ , তখনি এলো বন্যা। খুব মনখারাপ।  কিন্তু এবার আমাদের দল  প্রায় ষাট জনের তাই নাকের বদলে নরুনের ব্যবস্থা হলো।  দিল্লী অবধি flight এর টিকিট ছিল , ঠিক করা হলো দুটো বাস নিয়ে চলে যাওয়া হবে নৈনীতাল আর ওখান থেকে জিম কর্বেট অভয়ারাণ্য। আমি , মেয়ে আর সুজিত মনখারাপ ভুলে এতেই মেতে উঠলাম। কটা দিন একটু অন্যরকম তো হবে। 


                                   কলকাতা বিমানবন্দরে ভোরের আলো। ..

সপ্তমীর ভোরে সেজেগুজে পৌঁছে গেলাম দিল্লী। মাঝে খাবারের জন্যে একটু অপেক্ষা আর তারপর বাস চেপে নৈনীতাল।  লেকের ধারেই হোটেল। পৌছতে আমাদের বেশ দেরী হয়ে গিয়েছিল আর ভোর থেকে উঠে শরীরও ক্লান্ত। রাতের খাওয়া সেরে ঘুম লাগলাম। ভোরবেলা উঠে হোটেল রুম এর বাইরে এসে মন ভরে গেল. তবে মনখারাপ হলো খুব ঘিঞ্জি এক শহর দেখে।কিন্তু লেক দেখে সত্যি মন ভরে যায়।  নৌকা চেপে লেকের জল থেকে আর উঠে আসতে মন চায়না।  আমরা আসতে আসতে এদিক ওদিক ঘুরে দেখে নিলাম। লেক এর দুধারে পাহাড় আর মেঘ ,কুয়াশা। সকালে ঘুরে আসার কথা ছিল মুক্তেশ্বর, ষাট জনের হই হই করা দল একরাশি বাচ্ছাদের নিয়ে সেটা আর করে উঠতে পারল না। কিন্তু তাহলেও মন আর অত খারাপ ও রইলো না সেই অভাব গল্প আড্ডা আর খাওয়া দাওয়া দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেলএমনিতেই এই ঘুরে আসাটা ছিল একটা ছোট খাট পিকনিক মেজাজের। নীচে রইলো আমাদের কিছু নৈনীতাল ঘোরার ছবি



Lunchbreak এইখানেই। ...


নৈনীতাল প্রথম দর্শনে। ...



হোটেলে এনাদের সঙ্গে দেখা।..



আহা কি আনন্দ !!



হোটেল থেকে দেবীর মন্দির। ..



পাহারজোড়া শহর এখন। ..



আমরা ও এবার boating করতে এসে গেলাম। ..















মন ভালো না হয়ে উপায় কি 



বিকেলে অল্প হাঁটাহাঁটি আর বেশি বিশ্রাম। ..







ভীমতাল ....





পরের দিন আমাদের ছেড়ে আসতে হলো নৈনীতাল এবার রওনা দেব জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক এর দিকে।  দুটো বাস ছুটল আমাদের নিয়ে। কর্বেট পার্ক এর কাছে  আমাদের থাকার  ব্যবস্থা দেখে চোখ জুড়োলো।  আর বারান্দায় দূরের প্রকৃতি দেখে মন। 











                                                           হোটেল রুম এর বারান্দা থেকে জঙ্গলের দিক  । ....


              
            
মাঝে আমরা দেখে নিয়েছিলাম museum . Museum যাবার রাস্তায় যা চোখে পড়ল। 

















         


বিকেলে হুজুগ উঠলো নদীর ধারে হেঁটে আসার।  আহা, কি যে সুন্দর সেই জায়গা, দুরে পাহাড় ,জঙ্গল আর সামনে নুড়ি পাথর ছাপিয়ে ছুটে চলেছে কোশী নদী। পাশেই ছোট্ট মন্দির।  আমাদের মন নেই সেই দিকে ...... আমরা মন দিয়ে নদী ,পাহাড় আর জঙ্গল দেখে মুগ্ধ হয়ে রইলাম......






পরেরদিন ভোরে অন্ধকার  থাকতে  ১১ টি জীপ হাঁকিয়ে  আমরা ছুটে চললাম জঙ্গল এ।  বাঘমামা দেখা দিলেন না ঠিক কিন্তু ভোরের আলো আঁধারিতে জঙ্গল আর এদিক ওদিক ত্রস্ত হরিণ আর ময়ূরের দেখা পেলাম।  প্রাচীন মন্দির ঘিরে জঙ্গল এর ভিতর চা এর দোকান , গলা ভিজিয়ে আবার জীপ্ ছুটল , আরো গভীর জঙ্গল.. মাঝে মাঝে নদী ও সঙ্গ দিল আমাদের। এই সৌন্দর্য কেবল চুপ করে দেখে যাবার, মুখে কথা নেই কারো ... জানিনা চোখের দেখার কত টুকুনি ক্যামেরা বন্দী করে আনতে পারলাম। যতটুকুন পেরেছি আমরা  ........

















বিকেলে আগুন ঘিরে আমাদের ছোট্ট উত্সব  ..  ছুটি শেষ , এবার ভাবনা আবার কোন নতুন জায়গা দেখে নেওয়া যায়  ......